গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি সিনেমায় অনেকেরই অনেক পছন্দের দৃশ্য থাকতে পারে, আমার কাছে ব্যাক্তিগতভাবে সবচেয়ে পছন্দের দৃশ্য ছিল – এক অমানুষ দ্বারা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আলিয়া ভাট অজয় দেবগনের কাছে গিয়েছে, অজয় তার অধীনস্থ কে বলছে আলিয়ার চিকিৎসার জন্য টাকা দিয়ে দাও। আলিয়া তার উত্তরে বলেছিল “পয়সা চাইনা ইনসাফ চাই।” রিমেম্বার দা ওয়ার্ড “ইনসাফ”। চার অক্ষরের একটা শব্দ কিন্তু আসমান সমান বিশালতা। এই ভুখন্ডে থেমে থেমে রক্ত ঝরেছে, পলাশীতে ঝরেছে, সিপাহী বিপ্লবে ঝরেছে, দেশভাগে ঝরেছে, একাত্তরে ঝরেছে, নব্বইয়ে ঝরেছে। কেন ঝরেছে জানেন? এই একটা শব্দ “ইনসাফ” এর জন্য ঝরেছে। এই সবুজ শ্যামল ভূখন্ডের অপরিসীম ধৈর্য্যশীল মানুষেরা ধৈর্যের বাধ ভেঙে রাস্তায় নেমে এসেছে শুধুই ইনসাফের জন্য। ভাত না, ভোট না, সম্মান না, অর্থ না, সম্পদ না, কোন লোভ লালসা না, শুধুই “ইনসাফ”। যেই জুলুম এই দেশের অল্পবয়সী তরুণ তরূনীরা সহ্য করছে, যেই নৃশংসতা এই দেশের মানুষ দেখছে গত ক দিনে, তাতে যে রক্ত ঝরেছে তা হয়তোবা আরো ঝড়বে কিন্তু পিছুপা হবার পথ নাই। আমি শুধু একটা ভিডিও দেখেছি, শিউরে উঠেছি, আঠারো বিশ বছরের একটা ছেলে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে হটাৎ বুকে গুলি খেলো, রক্তে তার সারা শরীর ভেসে যাচ্ছে, গল গলিয়ে চলা সেই ধারা দেখে তাকে ধরে রাখা আর একজন কে সে বলছে “আমি মারা যাবো তাইনা” পাশে যে তাকে ধরে আছে সে জানে এই ছেলে বাচবে না মিছে সান্ত্বনা দিচ্ছে, সতেরো সেকেন্ড এর এই ভিডিও আমি দ্বিতীয় বার দেখার সাহস পাইনি। শুধুই হাত তুলে মহান করুনাময় এর কাছে প্রার্থনা করেছি, হে পরয়ারদিগার তুমি আমাদের “ইনসাফ” দাও। এই দেশে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার দ্বায়িত্বে যারা, এরা কোন ধরনের কি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে, সেটা শিশু বালকেরাও বুঝতে পারে। আলিয়া ভাট কে ইনসাফ এনে দেয়া কোন অজয় দেবগন এই ভূখন্ডে নেই। এই ভুখন্ডের মজলুমের জন্য নৌকা, ধানের শীষে, লাঙল কাউকে দরকার নাই, জুলুম আর জালিম থেকে বাচিয়ে “ইনসাফ” দেবার জন্য তিনি একাই যথেষ্ট। মজলুমেরা তাদের রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, তাদের কাজ শেষ, বাকিটা উপরে যিনি আছেন তিনিই করবেন ইন শা আল্লাহ।
নিশ্চয়ই আল্লাহ সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী। সুরা আনফাল, আয়াত-৩০।