নগর জুড়ে যেন এক যুদ্ধ চলছে,
স্বাধীন সার্বভৌম দেশে বর্গী লুটেরা আসেনি লুট করতে।
কারা তবে লড়ে চলেছে অবিরাম?
বাশের লাঠি আর ছোট ছোট কোমল হাতে ধরে রাখা ইট পাথরের নুড়ি
বিপরীতে ওদের কায়া ঢেকে আছে বুলেটপ্রুফ ভেস্টে, মাথায় শক্ত হেলমেট, হাতে সয়ংক্রিয় রাইফেল।
সাদা আকাশে বুকে কাপন তুলে ক্রুর শব্দ করে ঘুরে ঘুরে উড়ে চলে যান্ত্রিক দানব।
সে ঈগল নয়, বাজ নয়, চিল নয়, সে নেমে এসে থাবা বসায় না, উপর থেকে জীবনগ্রাসী কিছু ছুড়ে দেয়।
অল্প বয়সী তেজদীপ্ত তরুনেরা তবুও ভয় পায়না, বুক এগিয়ে দেয়।
ছোট্ট এই বুক গুলো যেন আসমান সমান সাহস ধারণ করে।
ওদের দেখলে নিজেকে বড় ক্ষুদ্র মনে হয়, জীবন যেন কীট পতঙ্গের মতো।
এক অসম যুদ্ধে নির্বিচারে বলী হয়ে যাচ্ছে স্বজন পরিজন,
আর এক বুক ভরা ভয় নিয়ে ঘরের কোনে ঘাপটি মেরে বসে আছি, আমার মতো অসংখ্য কীটের নীরবতা যেন অসম যুদ্ধে দূর্বলদের টূটি চেপে ধরা কে সমর্থন করে চলে।
কেন যে সাহস নিয়ে জন্ম নেই নি এই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে মনে আসে।
অর্থ বিত্ত, সম্পদ, প্রেয়সীর হৃদয় অর্জন করে নেয়া যায়, কিন্তু সৎ সাহস কিভাবে বুকে নিয়ে আসে?
এই এক ভাবনা ভেবেই দিন পার হয়, রাত নিশুতি হলে ভাবনায় ক্ষ্রান্ত পরে, নয়ন জুড়ে নিদ্রা খেলা করে।
রাত্তির দ্বি প্রহরে আকাশে ভেসে চলা যান্ত্রিক দানবের গগনবিদারী শব্দে ঘুম ভাঙে,
চারপাশে চাপা আধার, লোডশেডিং,
তীব্র গরমের থেকে বাচার জন্য ঘর হতে বের হই,
শেষ কদিনে এটাই প্রথম বের হওয়া।
আধারের মাঝে অনেকটা সময় হেটে বেড়াই,
ধীরে হলেও সময় গড়ায়, ভোর হয়, পায়ের দিকে চোখ পরে, চমকে উঠি
পদতলের কালো পিচ নেই, লাল পিচ,
পিচ লাল, জমিন লাল, গগনের সূর্য লাল, সাহসের রঙ লাল,
সেই লাল পিচে হাত ছোয়াই, ভেজা সেই পিচের স্পর্শ কপালে ছোয়াই
কেন ছোয়াই তাও জানি না
স্বাধিকারীদের ভেজা রক্তের স্পর্শে যদি নিজের মাঝে বদল আসে, আসে যদি সাহস!